জৈব নিরাপত্তা (বায়োসিকিউরিটি)

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

৩.৫. জৈব নিরাপত্তা (বাজোসিকিউরিটি)

খামারকে রোগমুক্ত রাখতে ও কাশিত উৎপাদন পেতে হলে বারোসিকিউরিটির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বারোসিকিউরিটি বজার রাখার কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হলো-

  • শুকনা ও খোলামেলা জায়গায় যা জলাশয়, বাজার ও বনজঙ্গল থেকে দূরে, স্বাস্থ্যসম্মত ঘর তৈরি করতে হবে যেন হাঁস পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায়। সেডের নিকটে বড় গাছ বা ঝোঁপঝাড় রাখা যাবে না। 
  • খামারে নতুন বাচ্চা উঠানোর আগে খামার সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। 
  • সংখ্যানুপাতে ঘরে খাদ্যের পাত্র ও পানি পাত্র দিতে হবে। 
  • সালমোনেলা ও মাইকোপ্লাজমা রোগ মুক্ত হ্যাচারি থেকে সুস্থ সবল বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে। 
  • ভালো গুণগতমানসম্পন্ন খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। 
  • পরিচর্যাকারী ছাড়া খামারে মানুষের অবাধ যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিবার খামারে প্রবেশ করা ও খামার হতে বের হওয়ার সময় হাত ও পা অবশ্যই জীবাণুনাশক দ্বারা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। 
  • খামারে ব্যবহারের জন্য আলাদাভাবে পোশাক ও জুতার ব্যবস্থা করতে হবে । 
  • খামারে কোনো হাঁস অসুস্থ হলে দ্রুত পৃথক করতে হবে এবং মারা গেলে সাথে সাথে সরিয়ে নিয়ে ২ হাত গভীর গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। অসুস্থ হাঁস বাজারে বিক্রি করা যাবে না। 
  • খামারে যাতে বন্য পাখি, কুকুর, শিয়াল ও ইঁদুর জাতীয় প্রাণি প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ এদের মাধ্যমে রাণীক্ষেত, মাইকোপ্লাজমা ও সালমোনেলা রোগ ছড়াতে পারে।
  • খামারের চারদিকে বেড়া দেয়া যাতে বন্য প্রাণি, কুকুর, বিড়াল, দেশি হাঁস বা মুরগি ঢকুতে না পারে। এছাড়া প্রবেশ পথে একটি “প্রবেশ নিষেধ” সাইনবোর্ড টানানো । 
  • খামারের নিজস্ব পরিবহন না থাকলে বাজারের পরিবহনকে খামারের বেড়ার মধ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। যানবাহানের চালক বা কর্মীকে খাদ্য বা অন্যান্য দ্রব্য নিয়ে খামারে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। খামারের কর্মী দ্বারা এই দ্রব্যগুলো নিরাপদ দূরত্বে অবস্থানরত পরিবহন থেকে আনতে হবে। তবে প্রয়োজনে পরিবহনের গায়ে ভালোভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করে ১০০ মিনিট রাখার পর ভিতরে ঢুকতে দেওয়া যাবে। 
  • সপ্তাহে একদিন খামারে মাচা, বেড়া ও আশপাশ জীবাণুনাশক দ্বারা স্প্রে করতে হবে।
  • খামারের যন্ত্রপাতি, ডিমের ট্রে ইত্যাদি ভালোভাবে গরম সাবান-পানি দিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে তারপর জীবাণুনাশকে চুবিয়ে বা স্প্রে করে রোদে শুকিয়ে খামারে প্রবেশ করাতে হবে।
  • বাজার থেকে খামারি ফেরার পর জুতা ভালোভাবে সাবান দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে। কাপড় ধুয়ে নিজে গোসল করতে হবে।
  • কখনই ডিম/হাঁস বহনকারিকে খামারে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না । 
  • অবিক্রিত হাঁস ও ডিম বাজার হতে খামারে ফিরিয়ে আনা যাবে না ।
  • বর্জ্য পদার্থ, বিষ্ঠা, লিটার নিয়মিত পরিষ্কারসহ হাঁস-মুরগির ঘরের ভেতরের পরিবেশ অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত হবে।
  • প্রতি ব্যাচ সম্পন্ন করার কমপক্ষে ১৫ দিন পর বাচ্চা উঠানো যাবে। বাচ্চা উঠানোর পূর্বে মাচা, বেড়া, লিটার, খাদ্য পাত্র, পানি পাত্র, দেয়াল ও আশপাশ ভালোভাবে জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। পুরো ঘর ফিউমিগেশন করতে হবে । 
  • ব্যবহৃত খাদ্যপাত্র, পানি পাত্র ও লিটার ৩ দিন পরপর পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
  • পুরাতন হাঁসের ফ্লকে নতুন হাঁস ঢোকানো যাবে না । 
  • খামারের বর্জ্য দূরে কোথাও মাটি চাপা দেয়া বা পঁচানো বা কম্পোস্ট তৈরি করা যেতে পারে বা পুড়িয়ে ফেলা যেতে পারে । 
  • বিভিন্ন প্রজাতির এবং বিভিন্ন বয়সের হাঁসকে আলাদাভাবে পালন করতে হবে। 
  • পারিবারিক খামারের পরিচর্যাকারিরা হাঁসের ঘর পরিষ্কার ও যত্ন নেয়ার পর হাত-পা, স্যান্ডেল-জুতা ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুতে হবে। * গৃহপালিত হাঁসকে মুরগি, কবুতর ও বন্য প্রাণির সাথে মিশতে দেয়া যাবে না । 
  • খামারে কাজ করার সময় নাকে মাস্ক পড়তে হবে। কারণ হাঁস বার্ড ফ্লু ভাইরাসের বাহক হিসাবে কাজ করে। 
  • পারিবারিক ছোট খামারের বিষ্ঠা ও অন্যান্য আবর্জনা প্রতিদিন পরিষ্কার করে ঢাকনাযুক্ত গর্তে ফেলতে হবে। 
  • বাড়ির শিশুদের অসুস্থ ও মৃত হাঁস হতে দূরে রাখতে হবে। 
  • খামার থেকে ডিম তোলা ও হাঁস ধরার পর শিশুদের সাবান দিয়ে হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে হবে।
  • শিশুদের হাঁস ও পোষা পাখি থেকে দূরে রাখতে হবে এবং খেলতে দেয়া যাবে না ।
  • অসুস্থ হাঁস জবাই করে খাবারের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। 
  • অসুস্থ হাঁস বাজার থেকে কেনা যাবে না । 
  • অতিথি পাখি বার্ড ফ্লু ভাইরাস বহন করে বিধায় যেখানে অতিথি পাখি চরে সেখানে পোষা হাঁস চরতে দেওয়া যাবে না । 
  • বন্য পাখি বা অতিথি পাখি শিকার করা বা কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

অনুসন্ধানমূলক কাজ 

তোমার প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি যে কোন একটি হাঁসের খামার পরিদর্শন কর। খামারে হাঁসের যে সমস্ত রোগ | পরিলক্ষিত হলো তার লক্ষণসহ একটি তালিকা প্রস্তুত কর।

 

 

 

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion